চাহিদা
আজ যা চাই, কাল তা প্রয়োজনের তালিকা থেকেই মুছে যাবে—
যা না পেলে একদিন বুক ফেটে কান্না আসত,
“আহা, কী ছেলেমানুষ ছিলাম.....!”
চাওয়ার সেই আকুলতা, সেই উত্তাপ—
আসলে অনেক সময়ই টিকে থাকে মুহূর্তের জন্য,
আর আমরা ভাবি, সেই মুহূর্তটাই জীবন।
কিন্তু জীবন এত ঠুনকো নয়।
চাওয়া, পাওয়া আর তৃপ্তির মাঝখানে
এক গহিন শূন্যতা থাকে,
যা বোঝে কেবল সেই—
যে একদিন পেয়েও শান্ত হয়নি।
আমরা আবেগে সিদ্ধান্ত নিই,
হৃদয়কে বানিয়ে ফেলি আদালত—
যার রায় হয়তো বড় মায়াবী,
কিন্তু সময় নামের আপিল বিভাগে আর টিকে থাকে না।
সময়—
সে এক ধীর, কিন্তু ধারালো শিক্ষক।
সে শিখিয়ে দেয়,
যা আজ চাই, তা কাল কাঁধের বোঝা হতে পারে।
চাওয়ার আগে থামো,
একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করো—
এটা কি সত্যি প্রয়োজন?
নাকি কেবল সমাজের চাপ, না কি নিজের অহংকারের ছায়া?
জীবনের প্রতিটি চাওয়া যেন হয় পরীক্ষিত,
প্রতিটি সিদ্ধান্ত যেন হয় ধ্যানমগ্ন আত্মপাঠ,
কারণ একবার বদলে গেলে পথে ফেরা সহজ নয়।
মানুষের মন যেমন বদলায় ঋতুর মতো,
তেমনি চাহিদাও বদলায় সময়ের বাতাসে।
তাই জীবন নামের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হলে
চাওয়ার সঙ্গে চাই স্থিরতা,
আর আবেগের সঙ্গে দরকার একটু দূরদৃষ্টি।
সত্যি করে বলো—
আজ যেটাকে না পেলে মরেই যাবে বলে মনে হচ্ছে,
তা কি পাঁচ বছর পরেও তোমার জীবনে থাকবে?
না থাকলে,
তাকে ঘিরে জীবন বদলে ফেলার আগে
আরেকবার ভাবা দরকার—
না হলে ভুলটা থাকবে চিরকাল,
তার দায় আর কেউ নেবে না, দায়ী কেবল তুমিই।