তোমাকে ভেবে কবিতা লিখি না
প্রিয়তি,
তোমাকে ভেবে কবিতা লিখি না।
চুপ করে থাকি কিছুক্ষণ।
তুমি হয়তো তখন দূরে কোথাও হাঁটছো—
অথবা তোমার জানলায় এসে ধাক্কা খাচ্ছে কোনো হলদে পাখি।
তোমার হাতে তখন আধখানা ভিজে কাপড়,
চুল ভিজে আছে শেষ বিকেলের মেঘে,
তুমি হয়তো আয়নায় তাকিয়ে হাসছো,
ঠিক তখনই শব্দেরা নিজেই দরজায় কড়া নাড়ে।
প্রিয়তি,
আমি কেবল তোমার অনুপস্থিতি টের পাই ঘরের বাতাসে—
যেমন বালিশে লেগে থাকা শ্যাম্পুর গন্ধে,
যেমন পুরনো চিঠির ভাঁজে মিশে থাকা নিঃশ্বাসে,
তোমার ছুঁয়ে যাওয়া কোনো এক চায়ের কাপ
অথবা ছাপ রেখে যাওয়া একটি বইয়ের পৃষ্ঠায়
জেগে ওঠে কবিতারা—
এমনকি তাদের রচনার প্রয়োজন হয় না।
প্রিয়তি,
তুমি জানো?
তোমাকে নিয়ে কিছু লিখতে গেলেই মনে হয়—
ভাষা যেন তুচ্ছ, শব্দ যেন সংকীর্ণ,
আর আমার কলম এক পাষাণ নির্বাকতা।
তুমি এমনই এক উপস্থিতি,
যাকে উচ্চারণ করলেই ছোট করা হয়।
তাই লিখি না।
শুধু পাশে থাকি, দূর থেকে—
তোমার অগোচরে প্রতিটি মুহূর্ত
একটি করে কবিতার জন্ম দেয়।
একদিন তুমি পড়বে, বিস্মিত হবে—
“এত কিছু লিখেছো আমায় নিয়ে?”
আমি বলব—
“না, তোমাকে নিয়ে নয়।
তুমি যে ছিলে, সে কারণেই কবিতারা
নিজেই নিজের ভাষা খুঁজে পেয়েছিল।”